বিস্তারিত
বন্যায় মাছ চাষে করণীয়
বন্যার পূর্বে মৎস্যচাষি ও উদ্যোক্তাগণের করণীয়:
- নতুন পুকুর বা জলাশয় খননের ক্ষেত্রে বন্যামুক্ত এলাকা বেছে নিন।
- মাছ ছাড়ার পূর্বে ভালভাবে পাড় মেরামত করার পাশাপাশি পাড় উঁচু করে বেঁধে দিন।
- পাড়ে ইঁদুরের গর্ত থাকলে তা ভাল করে বন্ধ করুন।
- পুকুর বা জলাশয় বানা বা নেট দিয়ে ঘিরে দিন।
- অপেক্ষাকৃত বড় মাছগুলি বিক্রি করার ব্যবস্থা নিন।
- বন্যা কবলিত হতে পারে এমন পুকুরের ছোট মাছগুলি নিরাপদ জলাশয়ে স্থানান্তর করুন।
- বন্যা পরবর্তী মজুদের জন্য পোনা প্রতিপালন করুন বা পোনা উৎপাদনকারীর সাথে যোগাযোগ রাখুন।
- নিকটস্থ মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং স্থানীয় মৎস্য সম্প্রসারণ প্রতিনিধির (লিফ) সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখুন।
বন্যাকালীন মৎস্যচাষি ও উদ্যোক্তাগণের করণীয়:
- বন্যা কবলিত পুকুর হতে মাছ নিরাপদ জলাশয়ে স্থানান্তর করুন।
- সম্ভব হলে পাড় উঁচু ও শক্ত করে বেঁধে দিন।
- দ্রুত পুকুর বা জলাশয়ের চার পাড়ে নেট বা বানা দিয়ে উঁচু করে ঘিরে দিন।
- পুকুর বা জলাশয়ের কোণায় ও মাঝে ঝোপঝাড় দিয়ে মাছের আশ্রয়স্থল বানিয়ে নিন।
- মাছ দ্রুত আকৃষ্ট হয় এমন খাবার (খৈল, চিটাগুড়, কেঁচো ইত্যাদি) পুকুর বা জলাশয়ের খাদ্যদানিতে দিয়ে রাখুন।
- একই এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া পুকুর বা জলাশয়ের মালিকগণ সমাজ ভিত্তিক বা যৌথভাবে নেট জাল বা
- বানা দিয়ে ঘেরাও করে মাছ চাষ ও রক্ষা করার উদ্যোগ নিতে পারেন।
- বন্যা কবলিত পুকুরের মাছ খাবি খাচ্ছে এমন লক্ষণ দেখা দিলে অক্সিজেন বর্ধক উপকরণ প্রয়োগ করুন।
বন্যা পরবর্তীকালে মৎস্যচাষি ও উদ্যোক্তাগণের করণীয়:
- পুকুর বা জলাশয়ের পাড় ভেঙ্গে গেলে দ্রুত মেরামত বা সংস্কার করুন।
- বন্যার পানি প্রবেশ করেছে কিন্তু সম্পূর্ণ পুকুর ভেসে যায় নাই এমন পুকুরে বন্যার পানি নেমে গেলে শতাংশ প্রতি
- ২৫০-৩০০ গ্রাম চুন এবং ১০০-২০০ গ্রাম লবণ ১৫ দিন পর পর ২ বার প্রয়োগ করুন।
- বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে নতুন করে পোনা মজুদের জন্য শতাংশ প্রতি ১ কেজি করে চুন প্রয়োগ করুন।
- ভাল জাতের বড় আকারের (৪-৬টি/কেজি) কার্প জাতীয় মাছের পোনা প্রতি শতাংশে ১৫-২০ টি হারে মজুদ করুন।
- নিয়মিত ও পরিমিত সুষম মৎস্য খাদ্য প্রয়োগ করুন।
- পুকুরের পানি ও মাছ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন।
- বন্যার পানির সাথে বাহির থেকে ভেসে আসা (অচাষযোগ্য) মাছ পুকুরে প্রবেশ করলে তা ঘন ঘন জাল টেনে ধরে ফেলুন।
- স্থানীয় মৎস্য দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে প্যাকেজভিত্তিক প্রযুক্তি গ্রহণপূর্বক মাছ চাষ করুন।
- বন্যাকবলিত বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি ৩-৪ মাস স্থায়ী হলে পেন বা খাঁচায় মাছ চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করুন।
- বন্যাকবলিত পুকুরে মাছের রোগ-বালাই দেখা দিলে স্থানীয় মৎস্য অফিসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখুন।
মৎস্য আইন মেনে চলুন:
- কারেন্ট জাল/চট জাল/কোনা জাল ব্যবহার/আড়াআড়িভাবে বানা স্থাপন বন্ধ করুন এবং অন্যকে ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করুন। কারেন্ট জাল ব্যবহার, পরিবহন, অধিকারে/দখলে রাখলে ১-২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা ৫০০০ টাকা অথবা উভয় প্রকার দন্ডে দন্ডিত হবেন।
- নদী-নালা, খাল বিল ও বন্যাপ্লাবিত এলাকা হতে ৯ ইঞ্চির নীচে কার্প জাতীয় মাছ, ১২ ইঞ্চির নীচে বোয়াল, আইর, সিলন এবং পাংগাস মাছের পোনা ধরা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। মৎস্য আইন ভঙ্গ করলে ১-২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড অথবা ৫০০০ টাকা জরিমান অথবা উভয় প্রকার দন্ডে দন্ডিত হবেন।
প্রচারে:
মৎস্য অধিদপ্তর, সুনামগঞ্জ।